ঢাকা , শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ , ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভোলায় অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবিতে গনধিকার পরিষদের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি


আপডেট সময় : ২০২৪-১২-০৯ ১৪:০৬:১৩
ভোলায় অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবিতে গনধিকার পরিষদের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি ভোলায় অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবিতে গনধিকার পরিষদের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি

আশিকুর রহমান শান্ত  ভোলা প্রতিনিধি। 

ভোলা জেলার নদীগুলো থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন, জমি দখল ও চাঁদাবাজি বন্ধের দাবিতে ভোলায় গন‌অধিকার পরিষদের আয়োজনে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।

সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১১ টায় ভোলা প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, গণঅধিকার পরিষদ ভোলা জেলা শাখার সদস্য সচিব আতিকুর রহমান আবু তৈয়ব, জেলা গন‌অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক আল আমিন হোসেন মঞ্জু, জেলা  গনঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক অন্তর হাওলাদার, লালমোহন পৌরসভা গন‌অধিকার পরিষদ এর আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল মামুন, ভোলা জেলা যুব‌অধিকার পরিষদের সভাপতি গাজী ইমরান, ভোলা জেলা ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি মোঃ আকতার, সাধারণ সম্পাদক আরিয়ান আরমান সহ প্রমুখ।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ভোলায় নদী ভাঙনে বিলীন হচ্ছে জনপদ। এর পাশাপাশি ভেঙে পড়ছে নদীকেন্দ্রিক ইকোসিস্টেম, ক্ষতি হচ্ছে জীববৈচিত্রের। দ্বীপ জেলা ভোলার প্রধান সমস্যা নদী ভাঙ্গন। মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে অন্তত ১০টি ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় এ সমস্যা আরো প্রকট হয়ে উঠছে। সদরের ভেদুরিয়া, ইলিশা, তুলাতুলি, বোরহানউদ্দিন, লালমোহন, তজুমদ্দিন ও চরফ্যাশনের বিভিন্ন এলাকায় নদীতে ভাটার সময় বালু কাটা হচ্ছে। নদী থেকে বালু কেটে নেয়ায় নদী ভাঙনে রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এ কারণে এলাকার পরিবেশে বিপর্যয় নেমে আসছে। ভোলা জেলার অসংখ্য মানুষ নিঃস্ব হয়েছে নদীভাঙ্গণে। সরকার কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে জিওব্যাগ, সিসি ব্লক দিয়ে ভাঙ্গন রোধে চেষ্টা করলেও বিগত সরকারে আমলে অবৈধ ভাবে ড্রেজার দিয়ে, মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদী থেকে বালু উত্তোলনের কারনে ভেস্তে যাচ্ছে রাষ্ট্রের হাজার হাজার কোটি টাকার ভাঙ্গন রোধের প্রকল্প। গত কয়েক বছরে ভোলায় পাউবোর ডিভিশন-১ ও ডিভিশন-২ এর মাধ্যমে ৩ শত ৩৫ কোটি টাকা ব্যায়ে ইলিশায় সিসি ব্লক দেওয়া হয়েছে। ভোলা জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বেড়িবাঁধ, সিসি ব্লক, জিও ব্যাগ, বালির বস্তাফেলাসহ কয়েক হাজার কোটি টাকার কাজ করেছে। পূণরায় মন্ত্রণালয়ে ৬ শত ৮৯ কোটি টাকার কাজ অনুমোদন হয়েছে। অথচ এত টাকা ব্যায়ে ও অবৈধ বালু দস্যুদের কারনে ঠেকানো যাচ্ছে না নদীভাঙ্গন। একদিকে বাঁধ নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে রাষ্ট্রের কোটি কোটি টাকা, অন্যদিকে বাঁধের কাছ থেকেই বালু তুলছে বালু দস্যুরা।


এতে হুমকির মুখে পড়ছে বেড়িবাঁধ, সিসি ব্লকসহ নদীর তীরের বিভিন্ন স্থাপনা। দীর্ঘদিন ধরে নদী থেকে বালু উত্তোলনের ফলে ইলিশা ব্লক ধ্বসে যাচ্ছে, অনদিকে রাজাপুর ইউনিয়নে দেখা দিয়েছে ভাঙন। এরই মধ্যে সেখানে ১ হাজার মিটার এলাকা বিলীন হয়ে গেছে। প্রায় দুই শতাধিক ঘর বাড়ী অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এখনো ঝুঁকির মুখে চারটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ মসজিদ, মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন স্থাপনা। এই চিত্র উপকূলের প্রায় প্রতিটি উপজেলায়। আমরা মনে করি যে ভাঙন চলছে, যদি এখনি মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীর বালু উত্তোলন স্থায়ী ভাবে বন্ধ না হয় তাহলে রাজাপুর, ইলিশা, শিবপুর ও ভেদুরিয়া ইউনিয়নসহ ভোলা শহর রক্ষা বাঁধ ও হুমকিতে পড়বে।


ভোলার বিভিন্ন উপজেলায় মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর ৩০টি ডুবোচর ৫০ জন প্রভাবশালীর দখলে রয়েছে। একেক প্রভাবশালীর দখলে রয়েছে ৩ থেকে ৫ কিলোমিটার এলাকা। সাধারণ জেলেদের ওই এলাকায় প্রবেশ ও জাল ফেলা নিষিদ্ধ রয়েছে। মাছের প্রজাতি শিকার করে ওই চক্র রাতারাতি কোটিপতি বনে যায়। ৩০টি ডুবোচর মুক্ত রাখা গেলে ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে। মৎস্য খাতে উৎপাদন দ্বিগুণ হবে, বলে আমরা আসা করি। শুধুমাত্র সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে নদীর দখলে কেবল হাত বদল হতে দেখা যায়। এছাড়াও চরগুলোতে রয়েছে আবাদি কৃষি জমি। ভূমিদস্যুরা কিছু খাসজমি ভূমি অফিস থেকে লিজ নিয়ে প্রকৃত মালিকদের বেদখল করে হাজার হাজার একর জমি অবৈধভাবে দখল করে কোটি কোটি টাকা নিয়ে যাচ্ছে কিছুসংখ্যক ভূমিদস্যুরা। উপরোক্ত বিষয়াদি সু-বিবেচনা পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে গনঅধিকার পরিষদ ভোলা জেলা আহ্বান জানায়।



 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin

কমেন্ট বক্স

প্রতিবেদকের তথ্য

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ